বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে খোলা চিঠি লিখেছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বিএনপি নেতা।
ওই বিএনপি নেতার নাম মো. নাসির উদ্দিন। তিনি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তবে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে খোলা চিঠির মাধ্যমে তিনি নিজেকে বিএনপির একজন সাধারণ কর্মী দাবি করেছেন।
তারেক রহমানের প্রতি তিনি ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল প্যানেলের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধান, সারা দেশের অবহেলিত-বঞ্চিত, নির্যাতিত ও অভিমানী নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা, দলে নতুন পদপ্রান্তদের বিষয়ে সতর্কতা ও দলে ইনসাফ কায়েম করার অনুরোধ জানিয়েছেন। দ্রুত সময়ে এসব বিষয়ে না ভাবলে ডাকসু নির্বাচনের মতো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বড় ধরণের মাশুল দিতে হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই বিএনপি নেতা।
লেখাটি পোস্ট করার পর দুপুর ২টা পর্যন্ত ওই লেখার সঙ্গে বিএনপির বেশ কয়েকজন পাঠককে সমর্থন জানাতে দেখা গেছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিনের লেখাটি পাঠকের জন্য হুবহু (বানান অপরিবর্তিত রেখে) তুলে ধরা হল-
প্রিয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি ভাল আছেন। আপনার দোয়ায় আল্লাহর রহমতে আমিও ভাল আছি। প্রিয় নেতা, আমি একজন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সাধারণ কর্মী মাত্র। আজকে আপনার উদ্দেশ্যে দু-একটি কথা বলতে চাই। আমরা যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কর্মী সমর্থক আছি, তাদের পক্ষ থেকে একটি আকুল আবেদন করছি, গতকালকে ডাকসু নির্বাচন হয়ে গেল এখানে আমাদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের ভরাডুবির কারণ অনুসন্ধান করতে হবে এবং এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ প্রয়োজন। সামনে জাতীয় নির্বাচন, একে সামনে রেখে এখন থেকে আপনাকে সারাদেশে অবহেলিত বঞ্চিত নির্যাতিত নেতা-কর্মীদের সাথে আলোচনা করে দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, তা না হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আমাদেরকে বড় ধরনের মাসুল দিতে হতে পারে। তাই আপনার কাছে একটা বিশেষ অনুরোধ আপনি যত দ্রুত সম্ভব সারা দেশের জাতীয়তাবাদী দলের ত্যাগী অবহেলিত বঞ্চিত যারা দলের জন্য সারা জীবন কাজ করেছে এখন অভিমান করে বা কিছু নেতার অবহেলার কারণে দলের কার্যক্রম থেকে দূরে সরে আছে মনে কষ্ট নিয়ে, তাদের বিষয়ে এখনই ভাবুন, সময় খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে, মানুষ রাজনীতি করে মূলত সম্মানের জন্য। কিন্তু বর্তমানে নিত্য নতুন কিছু নেতা কর্মীর দলের মধ্যে আগমন ঘটেছে বা পদ দেওয়া হয়েছে, এদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।
আর দলের মধ্যে ইনসাফ কায়েম করতে হবে। ইনসাফ ভিত্তিক দল কায়েম হলেই সকল নেতাকর্মী তাদের সম্মান নিয়ে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। আপনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে তা করতে সক্ষম হবেন। এই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আপনার নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে আছেন। দলের মধ্যে যারা স্বৈরাচারী কায়দায় দল পরিচালনা করছেন তাদের বিষয়েও আপনি আপনার নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিন। আজ এই পর্যন্তই। আল্লাহ তায়ালা আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবন দান করুক।
প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টি পদেই জয়ী হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। বাকি পদগুলোতে স্বতন্ত্র ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের প্যানেল থেকে জয়ী হয়েছেন। তবে একটি পদেও জিততে পারেননি ছাত্রদলসহ বাকি প্যানেলের প্রার্থীরা।
ভিপি, জিএস এবং এজিএস বাদে ডাকসুর ১২টি সম্পাদকীয় পদের মধ্যে ৯টিতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহসাধারণ সম্পাদকপদসহ (এজিএস) ডাকসুতে পদ আছে ২৮টি। এর মধ্যে সদস্যপদ ১৩টি।